আমেরিকার নতুন সরকার ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ গুলোর পোষ্টমডাম হতে আর কত দূর❓Provat Bangla tv
আমেরিকার নতুন সরকার ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ গুলোর পোষ্টমডাম হতে আর কত দূর❓Provat Bangla tv
ট্রাম্প এর বিদায়ের সাথে সাথেই আমেরিকার অভ্যন্তরীণ মানুষদের সাথে মধ্যপ্রাচ্যও যদিও দীর্ঘ রিলিফ এর আশা করছে , কিন্তু সেটা সম্ভব না । কারণ , বাইডেন প্রশাসনের পুরোনো কৌসুলিরা যারা মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্কে অজ্ঞ নয় ( যা ট্রাম্প প্রশাসন ছিল )। বিশেষ করে ওবামা আমলের সব যুদ্ধবাজদের একত্রিত করার মাধ্যমে বাইডেন তার নীতি স্পষ্ট করে দিল । বাইডেন তার পররাষ্ট্র বিষয়ক দল ঘোষণার পর ওয়াকবিহালদের বুঝতে বাকি থাকবেনা , অস্ত্রের বাজার খালি হতে আর বেশিদিন নেই ।
কুইন্সি ইনস্টিটিউট এর এ্যান্ড্রু বাসেভিচ এর মতে , “ এই দলটিতে আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের ওপর একটা বিশ্বাস আছে এবং তা হয়তো তাদেরকে আমেরিকান সামরিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে হঠকারিতার পথে নিয়ে যেতে পারে।"
পররাষ্ট্রবিষয়ক বিষয়ে বাইডেন তার পুরোনো বন্ধু অ্যান্টনি ব্লিংকেং (ওবামার সময় সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ) কে নিয়োগ দেয় । যিনি প্রেসিডেন্সির প্রথম দিনই তুরস্কের উপর নিষেদাজ্ঞার হুমকি দেয় ন্যাটো জোট হিসেবে আচরণ ভালো করার জন্য । ইরাক যুদ্ধের মুল কারীঘর ব্লিংকেং । ইয়েমেনের যুদ্ধের অন্যতম মুল হোতা ব্লিংকেং ও সৌদির নেতৃত্ব জোটের আগ্রাসনের সমর্থক । সম্প্রতি ক্ষমতায় এসেই জেরসুসালেম কে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা দেওয়া আশান্বিত ফিলিস্তিনদের জন্য আরেক আঘাত ।
হিলারীর অন্যতম সহযোগী জ্যাক সুলিভান কে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয় । ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি করার মুল কারীঘর । এর কারণেই ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তি করা সম্ভব হয় । যা আসলে পরমাণু সীমিত করার নামে দুনিয়াকে ধোঁকা দিয়ে উৎপাদন কাজ অব্যাহত রাখা যা ইসরায়েলের দিকে তাক করা নয় । লিবিয়া আক্রমণে একমাত্র চাপ সৃষ্টিকারী হিলারী ক্লিংটনের মুল সহযোগী হলো সুলিভান । বিচক্ষন সুলিভান কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক পরিচিত ।
তুরস্কের মূল মাথাব্যথা ব্রেট ম্যাকগারক কে নিয়োগ দেওয়া হয় মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সমন্বয়কারী হিসেবে । যার আসলে মূল উদ্দেশ্য মধ্যপ্রাচ্য কে সমন্বয় নয় , ভাগ-ভাটোয়ারায় সাহায্য করা । পিকেকের ( কুর্দি জাতীয়তাবাদী দল ) সিরিয়ান শাখা ওয়াইপিজিকে মার্কিন সহায়তা দেওয়ার মূলে আছে এই যুদ্ধবাজ কূটনৈতিক । ম্যাকগারকের যুক্তি ছিল ওয়াইপিজির মাধ্যমে উত্তর সিরিয়ায় দায়েশ কে মোকাবিলা করবে যা নিজেই একটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। কিন্তু এর পিছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল তুরস্কের দক্ষিণপূর্বে সংঘাত বজায় রাখা ও কুর্দিদের নতুন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করা । উল্লেখ্য , ওয়াইপিজি মার্কিন সহায়তা নিয়েও ইরান ও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে । ইরাকের শিয়া নেতা নুর আল মালিকীর ( ২০০৬-১৪ ) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আশার পিছনেও এই ব্রেট ম্যাকগারকের হাত ছিল ।
কিছু সমীকরণ এরিমধ্যে আচ করা যায় । ইরানের উপর থেকে নিষেদাজ্ঞা শিথিল হলে ইয়েমেনে হুথি ,লেবাননে হেজবুল্লাহ , সিরিয়ায় বাশার আল আশাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে । ইসরায়েলকে আলোচনার টেবিলে বসানোর নাম করে দখলদারি অব্যাহত থাকবে । জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে বিচারের মরীচিকা দেখিয়ে ইয়েমেনে সাধারণ মানুষদের উপর বোমাবাজি চলবে । কুর্দিদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে । নতুন প্রশাসনের অ্যান্টি-তুর্কি অবস্থান তুরস্ককে ইরান-রাশিয়া বলয়ে নিয়ে যাবে । কিছুটা হলেও হামাস সুবিধা পাবে , কিন্তু দখলদারির বিরুদ্ধে সেটা যথেষ্ট নয় । ইরাকে ও আফগানিস্তানে নতুন করে সৈন্য মোতায়েনের ব্যপারেও চিন্তাভাবনা হবে । লিবিয়াকে বেনঘাজি ও ত্রিপলিভিত্তিক ভাগ করে দুই রাষ্ট্র গঠনের রাস্তা উন্মোচিত হবে । অপরাজিত কাতারে মুসলিম ব্রাথারহুড নতুন করে সঙ্ঘটিত হওয়ার সুযোগ পাবে । এতে নতুন করে মিসরের সিসি ও যুদ্ধবাজ ম্যাক্রনের ঘুম হারাম হবে ।
সুতরাং শান্তির বার্তা নিয়ে আসা নতুন মার্কিন-প্রশাসন যে আরো ব্যপক আকারে অশান্তি সৃষ্টি করবে , সে কথা বলাই যায় । ইসরায়েলকে আবর্তনকারী প্রাচ্য-মার্কিন রাজনীতি দিয়ে শান্তির আসা করা নিতান্ত বোকামি ছাড়া কিছুই নয় ।
Comments
Post a Comment